জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি কি যৌক্তিক?
প্রকাশিত: ৬ অগাস্ট ২০২২, ১০:৪৭ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত
ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে অনেকটাই বাড়াল সরকার। শুক্রবার দিবাগত রাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর থেকে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বিশ্ববাজারে দামের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, ডিজেল ও কেরোসিনের লিটার ৮০ টাকা থেকে ১১৪ টাকা, অকটেনের লিটার ৮৯ টাকা থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রোলের লিটার ৮৬ থেকে করা হয়েছে ১৩০ টাকা। জ্বালানি তেল এর হঠাৎই এমন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চলছে বিশদ আলোচনা-সমালোচনা। বিশ্ব বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে তেলের দাম বৃদ্ধি ও হ্রাস করার প্রক্রিয়া সব দেশেই চলমান। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রকৃতপক্ষে কতটুকু যৌক্তিক এই মূল্যবৃদ্ধি?
জানা যায়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৮০ থেকে ১৩৯ ডলার ছাড়িয়ে যায়। আর মার্চে তা বেড়ে ১৫৬ দশমিক ৩ ডলারে পৌঁছায়। এই মূল্যবৃদ্ধি ছিল গেল ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে আন্তর্জাতিক বাজরে দাম বাড়লেও এতদিন দেশের বাজারে বাড়ানো হয়নি।
গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত জ্বালানি তেলে লোকসান হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর ফলশ্রুতিতে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে দাম সমন্বয় করা ছিল অপরিহার্য।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, গত ২০ বছরে ১৭ বার ডিজেলের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। দাম বেড়েছে ১৩ বার আর কমানো হয়েছে ৪ বার। এর মধ্যে বিএনপির শাসনামলেই (২০০১-২০০৬) বেড়েছে ৯ বার। তবে বর্তমান সরকারের আমলে জ্বালানি তেলের দাম একাধিকবার কমানোর নজির রয়েছে।
২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছিল। এর আগেও ২০০৯ সালে ১৩ জানুয়ারি ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমানো হয়েছিল আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনর্বিবেচনা করা হবে।
শুধু বাংলাদেশে নয়, প্রতিবেশী দেশগুলোতেও বৃদ্ধি পেয়েছে জ্বালানি তেলের মূল্য। প্রতিবেশী দেশ ভারতে ডিজেল (টাকার অংকে) ১১০ দশমিক ৯৫, অকটেন ১৩৫; চীনে ডিজেল ১১৮ দশমিক ৬৩, অকটেন ১৩১ দশমিক ৯৯; নেপাল ১২৭ দশমিক ৮২, অকটেন ১৩৪ দশমিক ৫৫; পাকিস্তানে ডিজেল ১০৩ দশমিক ৭১, অকটেন ১০৬ দশমিক ৬৪; সিঙ্গাপুরে ডিজেল ১৮৯ দশমিক ৮৭, অকটেন ১৯০ দশমিক ৪৫ এবং হংকংয়ে ডিজেল ২৬০ দশমিক ৭৫ ও অকটেন ২৮৪ দশমিক ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।