পাবনায় নার্সের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

শেখ সাখাওয়াত হোসেন, পাবনা

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২২, ০৮:০৫ পিএম


পাবনায় নার্সের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

একাত্তর পোস্ট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সেবা তত্বাবধায়ক উমা রায়ের বিরুদ্ধে তার অধীনস্থ নার্সিং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা হুমকি দিয়ে অনৈতিক সুবিধা, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রোগ্রামের টিভিনের টাকা আত্মসাৎ সহ ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। 

হাসপাতালের ভুক্তভোগী নার্সিং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাক্ষরিত একাধিক লিখিত অভিযোগে এ তথ্য জানা গেছে।

হাসপাতালের নার্সিং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেওয়া অভিযোগটি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদফর, নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদফতরসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদফতরের পক্ষে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

অধিদফতরের প্রশাসন ও মিডওয়াইফারী বিভাগের সহকারী পরিচালক মীরা রানী দাসের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার (১১ই অক্টোবর) সরেজমিন তদন্ত করেছে।

তারা অভিযুক্ত সেবা তত্বাবধায়ক উমা রায়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। তবে তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলতে চাননি।

ভুক্তভোগীদের দেওয়া অভিযোগে জানা গেছে, সেবা তত্বাবধায়ক উমা রায় দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালের বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতি-অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছেন।

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রোগ্রামের টিভিনের জন্য টাকা আত্মসাৎ, অতিরিক্ত ও অসময়ে ডিউটি দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা আদায়, এসিআর-ডিজিএনএম-এ টাকা জমা দেওয়ার নাম করে অর্থ আদায়, নার্সিং বিষয়ে ট্রেনিং করার নামে অর্থ আদায়, চেয়ার ও অরগানোগ্রামের কেনার নামে চাঁদা আদায় এবং বেসরকারি নার্সি ইনস্টিটিউট থেকে ইন্টার্নি করাতে আসা শিক্ষার্থীদের কাজ থেকে অনৈতিক অর্থ আদায়সহ ২৩টিরও বেশি অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে এসব অভিযোগপত্রে।

অভিযোগকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, তার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট। আমরা বিভিন্ন সময় হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ও সিভিল সার্জনের কাছে একাধিক বার মৌখিক অভিযোগ দিয়েছি। এতে কোনও কাজ হয়নি।

অজ্ঞাত কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয় না। এজন্য তিনি ইচ্ছে মতো যা খুশি তাই করেন। কারো তোয়াক্কা করেন না। তার দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা অনেকটাই নাজুক হয়ে পড়ে।

তারা আরো বলেন, তিনি যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করে ডক্টর ডিগ্রি ব্যবহার করেন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও অস্তিত্ব নেই। তিনি আমাদের তার ব্যক্তিগত কাজেও জোরপূর্বক ব্যবহার করে থাকেন। তাই অতিষ্ট ও বাধ্য হয়েই আমরা উচ্চ মহলে অভিযোগ দিয়েছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেবা তত্বাবধায়ক উমা রায় বলেন, তদন্ত কমিটির কাছে আমি আমার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগের জবাব দিয়েছি। আমার চাকরির আর মাত্র কয়েক মাস বাকি আছে। এই মুহূর্তে আমি এসব বিষয় নিয়ে আর কোনও কথা বলতে চাই না।

এ বিষয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীর বলেন, অভিযোগুলো আমার আগের সহকারী পরিচালকের সময়ে করা হয়েছে। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তাই তদন্তাধীন বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারবো না। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়ে সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

পাবনা সিভিল সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী জানান, অভিযোগের বিষয়ে নার্সিং অধিদপ্তরের ডিজি পর্যায়ে থেকে তদন্ত হচ্ছে। ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত করে গেছেন। তবে এই প্রতিবেদন পাবনাতে নয় তারা নার্সিং অধিদফতরে জমা দিবেন। এর বাইরে এই বিষয়ে এই মুহূর্তে আর কিছু বলতে পারছি না।

Link copied