চট্টগ্রামে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার গ্যাস বিল বকেয়া
প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০২২, ০২:৪৩ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানিতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিপুল পরিমাণ বকেয়া পড়ে রয়েছে। এসব বকেয়া আদায়ে কোম্পানির কার্যকর উদ্যোগ নেই। এতে বকেয়ার পরিমাণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে গ্রাহক পর্যায়ে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বকেয়া অনাদায়ি রয়েছে। সবচেয়ে বেশি বকেয়া রয়েছে গৃহস্থালি খাতে। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও মামলা না দেওয়ায় পুনরায় গ্যাস চুরিতে লিপ্ত হচ্ছেন তারা।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, কোম্পানির মোট বকেয়ার মধ্যে সরকারি খাতে প্রায় ১৮ কোটি ২৭ লাখ ও বেসরকারি খাতে প্রায় ৩৯ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। তার মধ্যে গৃহস্থালি পর্যায়ে সরকারি খাতে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা। আর শিল্প খাতে বকেয়া রয়েছে প্রায় ৭৪ কোটি টাকা এবং বাণিজ্যিক পর্যায়ে রয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকা। কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানিতে গ্যাস চুরি বন্ধ, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও বকেয়া আদায়ে অভিযান পরিচালনা করার জন্য আলাদা ভিজিল্যান্স বিভাগ রয়েছে। এই বিভাগে প্রচুর জনবল ও অন্যান্য সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। গত কয়েক বছর যাবৎ আবাসিক খাতে গ্যাসের সংযোগ প্রদান বন্ধ রয়েছে। ডিমান্ড নোটের টাকা পরিশোধ করেছেন এ ধরনের প্রায় ২৫ হাজার আবেদন জমা রয়েছে। নগরীতে বিভিন্ন স্থানে আবাসিক নতুন ভবন নির্মাণ ছাড়াও পুরোনো ভবনের সম্প্রসারণ হচ্ছে। ফলে সম্প্রসারিত ভবনে গ্যাসের চুলা বর্ধিতকরণের মাধ্যমে গ্যাস চুরির প্রবণতা বেড়েছে। ভিজিল্যান্স টিমের এক কর্মকর্তা জানান, অভিযানে সম্প্রসারিত ভবনের গ্যাস চুরির প্রবণতা বেশি ধরা পড়ছে। দোকান থেকে লোক নিয়ে গ্যাসলাইন সম্প্রসারণের কাজ করা হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে। অভিযানে এ ধরনের প্রচুর অবৈধ সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে। শিল্পকারখানার মধ্যে অনুমোদিত গ্যাসের চেয়ে বেশি ব্যবহার করার সংযোগও পাওয়া গেছে।
কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানি বিপণন (উত্তর) মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. শফিউল আজম খান বলেন, বকেয়া অনেক কমে এসেছে। এখন দুই-তিন মাসের বকেয়া থাকলে লাইন কেটে দেওয়া হয়। আমরা বকেয়া আদায়ে কোনো আপস করছি না। আমাদের কোম্পানিতে প্রতি মাসে ৩০০ কোটি টাকার বিল হয়। সেই হিসাবে দুই মাসের বিলও বকেয়া নেই।
গ্যাস বিল চার মাসের বকেয়া অনাদায়ি হলে সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণের বিধান রয়েছে। বকেয়ার তালিকায় দেখা গেছে গৃহস্থালি খাতে সরকারি পর্যায়ে ৩৫ কোটি টাকা ও বেসরকারি খাতে ৫৬ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। বিপুল পরিমাণ বকেয়া রেখেও গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। বকেয়া আদায় নিয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, তারা বকেয়া পরিশোধের জন্য মাইকিং করেন। নোটিশ পাঠান। কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির ডিজিএম (রাজস্ব) প্রকাশ কুমার রায় বলেন, অনেক গ্রাহক অনলাইনে বিল পরিশোধ করেন। বকেয়া পরিশোধে এলাকায় এলাকায় মাইকিং ছাড়াও গ্রাহকদের কাছে বকেয়ার হিসাব পাঠানো হয়। তার পরও যদি পরিশোধ না করে, সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণের প্রক্রিয়া শুরু করি।’
কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানিতে সব মিলিয়ে ৬ লাখ ২ হাজার ৩৭৫টি গ্যাস সংযোগ রয়েছে। তার মধ্যে আবাসিক সংযোগ রয়েছে ৫ লাখ ৯৮ হাজার, শিল্প ১১৮১টি, কেপটিভ পাওয়ার ২০১টি,বাণিজ্যিক ২ হাজার ৯১১টি ও সিএনজি ৭০টি। বাকিগুলো অন্যান্য খাতে সংযোগ।