প্রতারণায় ব্রেণস্টোকে মৃত্যু

মনজু হোসেন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২ অগাস্ট ২০২২, ০১:৩৪ পিএম


প্রতারণায় ব্রেণস্টোকে মৃত্যু

ছবি: একাত্তর পোস্ট

একাত্তর পোস্ট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পঞ্চগড়ের দবিরুল ইসলাম প্রধান (৫৫) ছেলের চাকরির জন্য ১২ লাখ টাকা দিয়ে প্রতারিত হন, টাকা ফেরৎ চাইতে গিয়ে হন লাঞ্ছিতের শিকার। 

অপমান সইতে না পেরে স্ট্রোক করেন তিনি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে ক্ষুব্ধ হন এলাকাবাসী। লাশ নিয়ে প্রতারকের বাড়িতে অনশন শুরু করেন তারা। অতপর মাদ্রাসার সাবেক সভাপতির বাড়িতে মরদেহ রাখার ঘটনা ঘটে।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৬ নং সাতমেড়া ইউনিয়নের প্রধান পাড়া এলাকার মোঃ জুলফিকার আলী (৩৪) প্রধান পাড়া দারুনফালা দাখিল মাদ্রাসার সাবেক সভাপতির বাড়িতে এঘটনাটি ঘটে। 

মাদ্রাসার সভাপতি ওই এলাকার মৃত আব্দুর সাত্তার ছেলে। বৃহস্পতিবার সন্ধা থেকে ওই এলাকার জুলফিকার প্রধান নামের ওই প্রতারকের বাড়িতে মৃত দবিরুলের লাশ নিয়ে অনশন করছেন এলাকাবাসী। এঘটনায় বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত জুলফিকার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রধান পাড়া দারুনফালা দাখিল মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি ম্যানেজিং কমিটি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় মোঃ জুলফিকার আলী শূন্য পদ জনবল নিয়োগের নিমিত্ত বিজ্ঞপ্তিতে লাইব্রেরিয়ান (গ্রন্থাগারিক) পদে তার স্ত্রীর মামাতো ভাই জাকির হোসেন কামিল (এম,এ) পাশ শূন্য পদে চাকুরি দেওয়ার নাম করে প্রায় ১১ লক্ষ এবং গ্রন্থাগারিক জাল সনদ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। এদিকে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী মর্জিনা বেগমকে আয়া এবং নৈশ্য প্রহরী পদে নিয়োগ দিয়ে ১১ লক্ষ টাকা হাতিয়েছেন।

 মৃত দবিরুলের ভাই বদিরুল ইসলাম বলেন, আমার ভাতিজাকে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ১২ লাখ টাকা দাবি করে জুলফিকার। আমার বড় ভাই জমি এবং গরু বিক্রি করে তাকে ১২ লাখ টাকা দেয়। কিন্তু জুলফিকার চাকরি না দিয়ে প্রতারণা করেছে। টাকা ফেরৎ চাওয়ায় আমার বড় ভাইকে লাঞ্ছিতও করা হয়। 

মৃত দবিরুল ও স্ত্রী সহ তার ভাগনী জামাই দারুনফালা দাখিল মাদ্রাসার সাবেক সভাপতির বাড়ি যান পাওনা টাকা আদায়ের জন্য এদিকে জুলফিকার আলী বাসায় তাদেরকে অশালীন ভাবে গালিগালাজ এবং বটি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করলে এক পযার্য় বাড়ি থেকে বের হন দবিরুল ইসলাম অপমান অপদস্ত মেনে নিতে না পারায় হঠাৎ করে তিনি মাটিতে পড়ে যান।

স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন দবিরুল। চিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিক হলেও গত ৭ আগষ্ট ফের স্ট্রোক করেন তিনি। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় হয় তাকে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যান তিনি।

স্বজনদের দাবি- টাকার চিন্তায় স্ট্রোক করেছেন দবিরুল। যতক্ষণ পর্যন্ত বিষয়টি সুরাহা হবেনা ততক্ষণ পর্যন্ত লাশ নিয়ে অনশন চালিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেন তারা।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে পঞ্চগড়ে তার বাসায় না এনে আত্মীয় স্বজনরা সভাপতির বাড়ি রেখে আসেন মৃত দবিরুল ইসলামের মরদেহ। 

পাওনা টাকা না দেওয়া পর্যন্ত মৃতের দেহ দাফন সম্পূর্ণ করবেন না বলেন তার পরিবার। মৃতের সহধমর্ীনি তিনি বলেন আমার স্বামী ছেলে চাকুরির জন্য জমি বিক্রি করে তাকে টাকা দেওয়া হয়েছিল টাকা চাওয়ার কারণে ব্রেন স্ট্রোকে তিনি মারা গেলেন আমি তার পাওয়া ফেরত এবং আইনগত বিচার চাই। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত জুলফিকার আলম প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

সাতমেড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি বলেন, এমন একটি ঘটনা লোকমুখে শুনেছি। আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললে বিস্তারিত জানা যাবে।

এব্যাপারে পঞ্চগড় সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে বলেন ঘটনা স্থলে পুলিশের টিম পাঠানো হয়েছে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Link copied